সুন্দরবনের মধু | Sundarban Honey

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু (Natural Honey)

সিজনের শুরুতে বাদামী রঙের দেখতে মধুই সুন্দরবনের খাঁটি ও বিশুদ্ধ মধু তবে ফুল ভেদে মধুর রং এর পার্থক্য হতে থাকে। খেতে খুবই সুস্বাদু এই মধু, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন থেকেই আহরণ করা অর্গানিক বা শতভাগ প্রাকৃতিক মধু বলতে সুন্দরবনের বিভিন্ন ফুল থেকে সংগ্রহীত প্রাকৃতিক চাকের মধু’কে বুঝায়।আমাদের দেশের প্রাকৃতিক মধুর সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে সুন্দরবন।
অনেকে মনে করেন, সুন্দরবনের মধু মানেই মিশ্র ফুলের মধু। আসলে, এটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। সুন্দরবনে প্রধানত ৪টি গাছের ফুল থেকে মধু উৎপন্ন হয়। খলিশা, গরান, কেওড়া ও বাইন গাছ। এই গাছ গুলোর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ বন বিভাগের অনুমতিক্রমে এপ্রিল মাসে শুরু হয় এবং জুন পর্যন্ত চলতে থাকে। সুন্দরবনের ফুলের ধরনের উপর মধুর স্বাদ ,ঘ্রাণ এবং রং এর পার্থক্য হয় যে কারনে মধুর দামের পার্থক্য হয়ে থাকে।

১৮৬০ সাল থেকে সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতি বছর কমবেশি সুন্দরবন থেকে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কুইন্টাল বা ২ লাখ ৫০ হাজার কেজি মধু আহরণ করা হয়ে থাকে।

সুন্দরবনের (ম্যানগ্রোভ) র’ মধুর বৈশিষ্ট্য:
✅সুন্দরবনের মধু আবহাওয়াগত কারণে সবসময় পাতলা হয় ।
✅মৌসুষের শুরুতে সাদাটে দেখায় তবে সুন্দনবনের ফুল ও সময় পরিবর্তনের সাথে লালচে রঙ ধারণ করে।
✅খেতে খুবই সুস্বাদু, হালকা টকটক মিষ্টি ও কিছুটা ঝাঝালো লাগে। মধুতে বুনো ঘ্রাণ থাকে।
✅মধুর বোতলে ঝাঁকি লাগলে অনকে সময় ফেনা সৃষ্টি হয়।
✅মধুর উপরে পোলেনের স্তর দেখা যায় যাকে আঞ্চলিক ভাষায় গাদ বলে।
✅সুন্দরবনের মধু সাধারণত জমতে দেখা যায় না।
সুন্দরবন মধু এক অনবদ্য সৃষ্টি, বৈচিত্র্যময় এই বাংলাদেশে উৎপাদিত খাঁটি সুন্দরবনের মধু গুণাবলীতে অনন্য। পুষ্টিবিদদের মতে, দেহের সমস্যা ও রোগব্যাধি থেকে বেঁচে থাকতে এই মধু সহায়ক ভৃমিকা পালন করে।
যেমন-
➡️মধু রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্যের কারণে শীতে ঠান্ডা, ফ্লু, কাশি এবং গলাব্যথার সমস্যা দেখা দিলে তার চিকিৎসায় দারুণভাবে কার্যকরী মধু।
➡️মধু ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। হজমে সহায়তা করে।
➡️অনিদ্রা, হাঁপানি, ফুসফুসের সমস্যা, অরুচি, বমিভাব, বুক জ্বালা রোধ করে।
➡️মধু দেহের ফ্যাট কমায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
➡️হালকা গরম দুধে মধু মিশিয়ে সেবন করলে পুরুষের বিশেষ শক্তি উন্নীত করতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

খাঁটি মধু অথবা ভেজাল/কৃত্তিম মধু চেনার ঘরোয়া কোনো পরীক্ষা নেই। ঘরোয়া পরীক্ষা বলতে আগুন, পানি, চুন, পিঁপড়া, ফ্রিজিং ইত্যাদি পরীক্ষা। আসলে এ পরীক্ষাগুলো দিয়ে খাঁটি অথবা ভেজাল/কৃত্তিম মধু চেনা সম্ভব নয়।

তাই, বিশ্বস্ততায় ভরপুর ও প্রকৃতির নির্যাস পেতে তাসকান -এর সুন্দরবনের মধু নিয়মিত সেবন করতে পারেন।